সরকারী চাকুরিতে প্রবেশের বয়স সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেট

চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরির্বতন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে একটা কমিটি করে দেওয়া হয়েছিল। তাদের রিপোর্ট নিয়ে গত ১৭/১০/২০২৪ তারিখে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আমরা পর্যালোচনা করেছি। আরও পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত পরে জানাব।’

চাকুরিতে প্রবেশের বয়স

গত ১৭/১০/২০২৪ তারিখে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা পুরুষের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৩৭ বছর করার সুপারিশ করেছে এ–সংক্রান্ত সরকার গঠিত পর্যালোচনা কমিটি। তবে তাঁরা চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার বয়স নিয়ে কিছু বলেননি।

সরকারী চাকুরিতে প্রবেশের বয়স সংক্রান্ত গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জমা

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারী চাকুরিতে প্রবেশের বয়স সীমা পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ কমিটি ইতোমধ্যে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ছেলেদের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর ও মেয়েদের ৩৭ বছর করার জন্য সুপারিশ করেছে এ সংক্রান্ত কমিটি।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, বয়স বাড়ানোর সুপারিশে বড় কারণ হিসেবে অন্তত তিনটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।

গত প্রায় এক যুগ ধরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত মূল্যায়ন কমিটি আন্দোলনকারীদের দাবির থেকেও বেশি বয়স সুপারিশ করেছে, যাকে নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্টরা।

এর কারণ জানতে চাইলে কমিটির এক সদস্য জানান, প্রথমে কমিটির পক্ষ থেকে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছেলে-মেয়েদের জন্য যথাক্রমে ৩২ ও ৩৩ বছর করার চিন্তা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে একাধিক শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর মত পরিবর্তন করে কমিটি।

চূড়ান্ত বিচারে চাকরিতে প্রবেশের বয়স কত হবে তা নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর।

তবে উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, এই সুপারিশই চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সাধারণভাবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তাদের নাতি-নাতনীদের জন্য ৩২ বছর। কমিটির প্রস্তাবনায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা নাতি-নাতনীদের জন্য আলাদাভাবে কিছু বলা হয়নি।

মেয়েদের বয়স কেন দুই বছরের বেশি? এমন প্রশ্নের জবাবে সূত্র জানায়, মেয়েরা অনেক সময় স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ার পর আবার নতুন করে ভর্তি হতে হয়। পড়াশোনার মাঝে বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারণে পড়ালেখায় বিরতি পড়ে। বিয়ের হলে সন্তান হয়ে যাওয়ার পর অনেক সময় চাকরির পরীক্ষা দিতে পারে না। এসব বিবেচনায় মেয়েদের বয়স দুই বছর বেশি রাখাকে কমিটি যৌক্তিক মনে করেছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়স কত সুপারিশ করেছে তা জানি না। তবে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা পড়েছে। আশা করি শিগগির এটা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।’

চূড়ান্তভাবে সরকার যদি এই কমিটির সুপারিশ ঠিক রাখে, তাহলে সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমাও বাড়াতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে স্বাভাবিকভাবে পেনশনযোগ্য হতে অন্তত ২৫ বছর চাকরির বয়স হতে হয়। তাই সরকার যদি প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই অবসরের বয়সসীমা বাড়াতে হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সচিব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত কমিটিকে শুধু চাকরিতে প্রবেশের বয়স পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ তাদের কার্যপরিধিতে অবসরের বয়স বাড়ানোর সুপারিশ করার সুযোগ নেই। তবে আমরা আশাবাদী, সরকার হয়তো একইসঙ্গে দুটোর ঘোষণা দেবে।’

প্রতিবেদনে চাকরিতে বয়সের প্রবেশসীমা সাময়িক বা স্থায়ী কোনো নির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি।

সূত্র জানায়, এ ধরণের সিদ্ধান্ত সময়ে সময়ে মূল্যায়ন করতে হয়। তাই আপাতত কোনো সময় উল্লেখ করা হয়নি। অন্যদিকে চাকরিতে বয়সের প্রবেশসীমা বাড়ানো সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাব প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

সুপারিশের যুক্তি:

১. করোনাভাইরাস মহামারিতে সরকারি চাকরির নিয়োগ বন্ধ ছিল। এই ক্ষতি পোষাতে গত সরকার বয়স ছাড় ঘোষণা করলেও আটকে থাকা নিয়োগে তেমন গতি ছিল না। অন্যদিকে নতুন নিয়োগের উদ্যোগও ছিল কম।

২. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় গত সরকার দেশের অর্থনীতি নিয়ে সমস্যায় ছিল। ফলে সরকারি-বেসরকারি উভয় চাকরির সুযোগ সীমিত হয়ে এসেছিল।

৩. গত সরকারের মামলা-হামলার কারণে অনেক ছাত্র সংগঠনের হাজারো মেধাবী শিক্ষার্থী নিয়মিত নিয়মে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেনি। ফলে তারা চাকরি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

এসব বিষয়কে কমিটির পক্ষ থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির অপর এক সদস্য বলেন, ‘গত সরকার করোনার কারণে বয়স ছাড়ের কথা বললেও নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। এটাও গত সরকারের একটি কূটচাল ছিল। তাই শিক্ষার্থীদের চাওয়া বয়সের চেয়েও বেশি সুপারিশ করেছি আমরা।’

সূত্র জানায়, কমিটির প্রধান মুয়ীদ চৌধুরী চাকরির বয়স বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছেন। তার নেতৃত্বে কমিটি সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সরকারি চাকরি সংক্রান্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করেছে। তারা দেখেছেন, আমেরিকায় কোনো বয়সসীমা নেই, নেপালে ৪৫ বছর, ভারতের কিছু প্রদেশে ৩৬ বছর রয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন দেশে বয়সসীমা আরও বেশি। তাই কমিটি বাংলাদেশেও বয়স বাড়ানোকে ইতিবাচক হিসেবে দেখেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা প্রতিবেদন দেখে সন্তুষ্ট হলে কমিটির প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে উঠানোর জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেবেন। এ ধরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠাতে হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চাকরির বয়স বাড়ানো হলে অনেক আইন-বিধি সংশোধন করতে হবে। তাই আইনগত দিকগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। তাই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি উঠানোর আগে হয়তো আইনি দিকগুলো সম্পর্কে চূড়ান্ত করতে আরও অনেক উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিল সরকার। গত সপ্তাহে এ কমিটি তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে। কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান। সদস্য হিসেবে ছিলেন, সাবেক যুগ্ম সচিব কওছার জহুরা, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম।

চাকুরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবি পর্যালোচনায় কমিটি গঠন

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। সম্প্রতি কয়েক শ চাকরিপ্রত্যাশী শাহবাগে সমবেত হন। একপর্যায়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসে অবস্থান নেন। সেদিন তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানান।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর দাবির বিষয়টি পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছিল সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। কমিটিতে আরও তিনজন সদস্য ছিলেন।

এই কমিটির দায়িত্ব ছিল চাকরিপ্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়ন করে জমা দেওয়া। এ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে পরামর্শ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই কমিটির সাচিবিক সহায়তায় ছিল।

চাকুরিতে প্রবেশের বয়স

চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো উচিত: পর্যালোচনায় গঠিত কমিটির প্রধান

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি পর্যালোচনায় গঠিত কমিটির প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবির যৌক্তিকতা আছে। এখনকার বয়স যেটি আছে, তা বাড়ানো উচিত। তবে কতটুকু করা যৌক্তিক, তা সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে চিন্তা করা হবে। গত ০২/১০/২০২৪ তারিখে সচিবালয়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুয়ীদ চৌধুরী এ কথা বলেন।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়স ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর।

চাকরিতে প্রবেশের বয়স

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। গত সোমবার কয়েক শ চাকরিপ্রত্যাশী শাহবাগে সমবেত হন। একপর্যায়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসে অবস্থান নেন। দুপুরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানান।

চাকুরিতে প্রবেশের বয়স 

ওই দিনই দাবির বিষয়টি পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্যসচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। এ কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে পরামর্শ দেবে। পরে আরও তিনজন সদস্য যুক্ত করা হয়।

মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, বয়স বৃদ্ধির দাবিতে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের সঙ্গে তাঁরা বসেছিলেন। সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে, সরকারের বর্তমান নীতিমালা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা এবং সবকিছু চিন্তা করে এ বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে তাঁদের (আন্দোলনকারী) যে বক্তব্য, বয়স বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সেশনজট, করোনাসহ বিভিন্ন কারণে চাকরিতে প্রবেশের বিদ্যমান বয়স বাড়ানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, এটা (চাকরিতে প্রবেশের বয়স) বাড়ানো দরকার। তবে কতুটুকু বাড়ানো দরকার, তা আজ বলতে পারবেন না। সবকিছু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন, কতটুকু বাড়ানো যায়।

আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জনপ্রশাসনে বৈঠক, জমা দেওয়া হলো বিএনপি-জামায়াতের সুপারিশও

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। বৈঠকে আন্দোলনকারীরা নিজেদের দাবিদাওয়া ও যুক্তি তুলে ধরেন। পাশাপাশি তাঁদের দাবির পক্ষে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও গণ অধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতাদের সুপারিশপত্রও জমা দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে, শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ–সংক্রান্ত সুপারিশ পাঠানো হবে।

গত ০৩/১০/২০২৪ তারিখ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ৩৫-প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শরিফুল হাসান, সদস্যসচিব মোহাম্মদ রাসেল ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল আমিন অংশ নেন।

চাকুরিতে প্রবেশের বয়স 

শরিফুল হাসান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি পর্যালোচনার জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। আজ দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গেলে ওই কমিটির প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী ও জনপ্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান আমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অতিরিক্ত সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী সাহেবকে দায়িত্ব দেন। পরে আমরা তিনজন তাঁর সঙ্গে কথা বলি।’

শরিফুল হাসান জানান, তাঁরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের সঙ্গে দেখা করে চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার পক্ষে সুপারিশপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। সেই সুপারিশপত্র তাঁরা অতিরিক্ত সচিবকে দিয়েছেন।

বৈঠক শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনকারীরা জানান, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার বিষয়টি সুপারিশ আকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর পাঠানোর ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ৩৫-প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পর্যালোচনা কমিটিকে আহ্বান ও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, যেন কোনোভাবেই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরের নিচে না হয়। বৈঠকে অতিরিক্ত সচিবের কাছে তাঁরা নিজেদের দাবির যৌক্তিকতা ও বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। কোনো কোনো বিষয়ে উন্মুক্ত বয়সসীমা রাখার জন্য সুপারিশ করেন।

হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩৫-এর দাবি বাস্তবায়নে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দাবি পূরণ না হলে ২২ অক্টোবর ‘ডু অর ডাই’ নামে শিক্ষার্থী মহাসমাগমের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

চাকুরিতে প্রবেশের বয়স 

সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক অবসরের বয়স বাড়ানোর দাবী

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

গত ০৫/১০/২০২৪ তারিখে সংগঠনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়স ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর। আর অবসরে যাওয়ার সাধারণ বয়স ৫৯ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে তা ৬০ বছর।

অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কমিটি গঠন করায় সরকারকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি যেমন যৌক্তিক, তেমনি অবসরের বয়সসীমাও বাড়ানো উচিত।

দীর্ঘ বঞ্চনার পর যেসব কর্মকর্তা ইতিমধ্যে উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন, তাঁদের দ্রুত সময়ের মধ্যে পদায়নের দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। পাশাপাশি বিগত স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের দেওয়া সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদায়ন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সে ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

এ সংক্রান্ত আরো জানতে ভিজিট করুন এই লিংক এবং এই লিংকে

সরকারী চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

উচ্চ শিক্ষা এবং স্কলারশীপ সংক্রান্ত তথ্য পেতে ভিজিট করুন।  

Leave a Comment