Education in Malaysia – A lot of foreign students study in various universities of this country. This country allows for part time job of maximum 20 hours in a week for the foreign students. All information about the education in this country are written here in Bengali for the better understanding of the visitors:
Education in Malaysia
মালয়েশিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ ওপরের দিক আছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে ২ লাখেরও বেশি। আধুনিক, প্রগতিশীল ও বহুসংস্কৃতির গতিশীল জীবনধারার দেশটি এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে। প্রতিবছর ১৪০টিরও বেশি দেশের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুবিধা পান দেশটিতে। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর নিহিত আছে সম্ভাবনাময় জীবনের হাতছানি ও কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার অর্জনের প্রক্রিয়া। রাজধানী শহর কুয়ালালামপুরকে শিক্ষার্থীরা সাশ্রয়ী শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রাখেন। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, এই কম খরচেই পাওয়া যায় উচ্চমানের জীবনযাত্রা। মালয়েশিয়ায় শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা উপভোগ করেন দেশটির প্রাণবন্ত সংস্কৃতি। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার উপায়, যোগ্যতা, আবেদনপদ্ধতি ও খরচ কেমন, তা জানা যাবে এ প্রতিবেদনে।
মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার যোগ্যতা
মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচুরসংখ্যক প্রোগ্রাম অফার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয় এই প্রোগ্রামগুলোয় ভর্তির যোগ্যতা। তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের যে সাধারণ যোগ্যতাগুলো পূরণ করতে হয়, তা হলো—
- স্নাতকের জন্য কমপক্ষে ১২ বছরের একাডেমিক সময়
- এসএসসি/এইচএসসি/ও-লেভেল/এ-লেভেল-এ সিজিপিএ ৫–এর মধ্যে ন্যূনতম ৩ দশমিক ৫০ (স্নাতক প্রোগ্রামগুলোর জন্য)
- সিজিপিএ–৪–এর মধ্যে ন্যূনতম ২ দশমিক ৫সহ একটি স্নাতক ডিগ্রি (স্নাতকোত্তরের জন্য)
- আইইএলটিএস স্কোর ৬ দশমিক ৫ (প্রোগ্রাম ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নির্ভর করে স্কোর পরিবর্তন হতে পারে)
কিছু প্রোগ্রামের জন্য জিআরই বা জিম্যাট স্কোরও প্রয়োজন হতে পারে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য মালয়েশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সগুলো অল্প খরচে উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো দেশটির পাবলিকবিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এগুলোর মধ্যে শীর্ষে— - ইউনিভার্সিটি মালায়া (ইউএম)
- ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মালয়েশিয়া (ইউটিএম)
- ইউনিভার্সিটি পুত্র মালয়েশিয়া (ইউপিএম)
- আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া (আইআইইউএম)
- ইউনিভার্সিটি সেন্স মালয়েশিয়া (ইউএসএম)
উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া জনপ্রিয় বিষয়গুলো— - এমবিএ
- কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স
- ডেটা সায়েন্সে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স
- মেডিসিন ও হেলথ কেয়ারে ব্যাচেলরস ও মাস্টার্স
- ব্যাংকিং ও ফিন্যান্সে ব্যাচেলরস ও মাস্টার্স।
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের বিষয়ের জন্য সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেঁছে নিতে পারে।
Education in Malaysia
মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার খরচ
মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রামের ভিত্তিতে সাড়ে তিন থেকে চার বছরের স্নাতক অধ্যয়নে খরচ পড়তে পারে ৯ হাজার ৬০০ থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত। ১ রিংগিত সমান ২৩ টাকা। আর এক থেকে দুই বছরের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে খরচ হতে পারে ৭ হাজার ৫০০ থেকে ১২ হাজার ৭০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত।
মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার আবেদনপদ্ধতি
মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অধ্যয়নের জন্য আবেদন শুরুতেই যে কাজটি করতে হয়, তা হচ্ছে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পছন্দের বিষয়ে পড়ার জন্য আবেদন করা। মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত দুই সময়ে আবেদন গ্রহণ করা হয়ে থাকে—
* প্রতিবছরের জুন মাসে আবেদন শুরু হয়। এ আবেদনের সময়সীমা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
* নভেম্বরে, এ আবেদনের সময়সীমা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
প্রথমেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো প্রস্তুত করতে হয়। এগুলো সাধারণত একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক রকম হয়। তার মধ্যে একদম মৌলিক কতগুলো নথিপত্রের একটি তালিকা উল্লেখ করা হলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- পূরণকৃত আবেদনপত্র
- হাইস্কুল সার্টিফিকেট (স্নাতকের জন্য)
- ব্যাচেলর সার্টিফিকেট (মাস্টার্সের জন্য)
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- বৈধ পাসপোর্ট
- মোটিভেশন লেটার
- ইংরেজি ভাষার দক্ষতা সার্টিফিকেট (আইইএলটিএস অথবা টোয়েফল)
- আবেদন ফি প্রদানের প্রমাণপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর করণীয়—
স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩৫/৪৫ মিলিমিটার)
- ১৮ মাস মেয়াদ থাকা পাসপোর্টের প্রথম কয়েকটি পৃষ্ঠা (যেখানে পাসপোর্টধারীর ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য আছে) এবং ভিসার সিলযুক্ত পৃষ্ঠাগুলো (যদি থাকে)
- মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যয়নের গ্রহণযোগ্যতা/ অফার চিঠি
- মেডিকেল রিপোর্ট
- সার্টিফিকেটসহ সব একাডেমিক রেকর্ডের কপি
- ৭৫০ মালয়েশিয়ান রিংগিতের ব্যক্তিগত বন্ড। এটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর অধ্যয়ন শেষে ফেরত দেওয়া হবে এই শর্তে যে তিনি মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করা হয়নি
- ইংরেজি ভাষাদক্ষতা সার্টিফিকেট (আইইএলটিএস/টোয়েফল)।
Education in Malaysia
অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি অনুমোদনপত্র
- মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত কভার লেটার; যেখানে শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করার জন্য আবেদনের কথা উল্লেখ থাকবে
পড়াশোনার খরচ ও জীবনযাত্রার খরচের জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের প্রমাণপত্র - শিক্ষার্থী যে দেশ থেকে যাচ্ছেন, সে দেশ থেকে প্রদানকৃত মালয়েশিয়া ভিসার অনুমোদনপত্র প্রাপ্তির পূর্ববর্তী বা প্রি-ভিএএল মেডিকেল রিপোর্ট। অবশ্য শিক্ষার্থী চাইলে মালয়েশিয়ায় গিয়েও তাদের নিবন্ধিত ক্লিনিকে প্রি-ভিএএল মেডিকেল স্ক্রিনিং করাতে পারেন। পাবলিক ইউনিভার্সিটিগুলোতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের প্রি-ভিএএল মেডিকেল স্ক্রিনিং–সংক্রান্ত নির্দেশাবলির জন্য তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়ায় আসার আগে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। একজন শিক্ষার্থী ইএমজিএসের (এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিস) মাধ্যমে অনলাইনে ভিসার আবেদন শুরু করতে পারেন। এ ছাড়া তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি বা ইএমজিএসের এজেন্টের মাধ্যমেও এই আবেদন করতে পারেন।
- ইএমজিএস হলো মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অংশ, যা মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইএমজিএস মালয়েশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সেবা প্রদানে ওয়ান-স্টপ সেন্টার হিসেবে কাজ করে।
- আবেদনের সময় সব নথি ক্রমানুসারে আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। যথাসম্ভব সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে পুরো আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনকারীকে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি প্রদান করতে হয়, যেটি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রামের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়।
- আবেদনপত্র জমা দেওয়ার তারিখ থেকে ১৪ কার্যদিবস পর প্রদান করা হয় ভিসা অনুমোদনপত্র প্রদান বা ভিএএল। প্রক্রিয়াধীন সময়টিতে শিক্ষার্থীরা আবেদনের সর্বশেষ অবস্থাটিও জেনে নিতে পারেন। তবে মালয়েশিয়ায় অভিবাসনের সময় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ই-ভিসার প্রয়োজন হবে। তারা খুব সহজেই ই-ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, যা মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া যায়।
মালয়েশিয়ায় পৌঁছার পর করণীয়
মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর প্রথম মাসেই কিছু কাজ জরুরিভাবে করে নিতে হবে। প্রথম সাত দিনের মধ্যে যেকোনো ইএমজিএস-নিবন্ধিত ক্লিনিকে মেডিকেল স্ক্রিনিং করে নিতে হবে। আবাসনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি শিক্ষাগত নথিগুলো সঠিকভাবে রয়েছে, তা নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইএমজিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্টুডেন্ট পাস (পাসপোর্টে স্টিকার) এবং আই-ক্যাড (বিদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র) সংগ্রহ করে নিতে হবে। স্টুডেন্ট পাস মূলত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাসপোর্টে একটি স্টিকার সংযুক্ত করে দেবে। আর আই-ক্যাড হলো মালয়েশিয়ার বহিরাগত শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র, যার মাধ্যমে তাদের মালয়েশিয়ায় থাকার বৈধতা নিশ্চিত হয়।
Education in Malaysia
মালয়েশিয়ায় আর্থিক ব্যবস্থাপনা
প্রত্যেক মানুষের খরচগুলো মূলত তার ব্যক্তিগত জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে। তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় স্থানীয় গোষ্ঠীর সংস্কৃতির সঙ্গে তিনি কতটুকু মানিয়ে চলতে পারছেন। মালয়েশিয়ায় থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, মেডিকেল, মুঠোফোন ও ইন্টারনেট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট; সব মিলিয়ে প্রায় ১৭০ থেকে ১৮০ মার্কিন ডলার খরচ হতে পারে।
খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
মালয়েশিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার বিরতি বা সপ্তাহান্তের ছুটির দিনগুলো মিলিয়ে সর্বাধিক ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। এর সঙ্গে অবশ্য তাদের স্টুডেন্ট পাসের বৈধতার সময়ও জড়িত। খণ্ডকালীন কাজের জন্য আবেদনগুলো অবশ্যই শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করতে হয়। তবে উত্তম হলো ক্যাম্পাসেই কাজ খোঁজার চেষ্টা করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, ক্যাফে বা অফিসের অভ্যর্থনা প্রায়ই বিভিন্ন কাজের সুযোগ দেয়, যেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতে বেশ সুবিধা হয়।
মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপের সুবিধা
মালয়েশিয়ার বাইরের থাকা আসা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচ পুষিয়ে নেওয়া জন্য আছে ঋণ, টিউশন ফি মওকুফ, শিক্ষা তহবিলসহ নানা অনুদানের ব্যবস্থা আছে। জনপ্রিয় স্কলারশিপগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া সরকারি স্কলারশিপ, মালয়েশিয়া কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, ফেলোশিপ প্ল্যান এবং মালয়েশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ অন্যতম। তা ছাড়া অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব বৃত্তি, অনুদান ও টিউশন মওকুফের কার্যক্রম চালু আছে।
Education in Malaysia
পড়াশোনা শেষে চাকরির সুযোগ
মালয়েশিয়ার বিদেশি শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের প্রথম ধাপ হলো প্রথমেই একটি চাকরির ব্যবস্থা করা। এ ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা কর্মচারীর পক্ষ থেকে তার ওয়ার্ক পারমিটের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এটি ইমপ্লয়মেন্ট পাস নামেও পরিচিত, যার মেয়াদ থাকে সর্বনিম্ন ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫ বছর। এ ছাড়া ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনের সময় পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১৮ মাস থাকা বাঞ্ছনীয়।