Higher Education in China with Scholarship

Higher Education in China – The quality of education in China is very good. China offers various scholarships for the international students. This country offers jobs after completing education. This issue is written in Bengali for the good understanding of the visitors.

Higher Education in China

সাশ্রয়ী অথচ উন্নত মানের শিক্ষায় শুধু ইউরোপই নয়; এগিয়ে রয়েছে এশিয়ার দেশগুলোও। পৃথিবীর বৃহত্তম এ মহাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও স্থান করে নিয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির বিদ্যাপীঠগুলোর তালিকায়। এগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা এগিয়ে চীনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। যুগ যুগ ধরে স্বতন্ত্র শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ নিয়ে দেশটি স্বাগত জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের। চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন ও স্কলারশিপসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

কেন চীন অন্যতম সেরা গন্তব্য

সভ্যতা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ চীন। আর্থসামাজিক দিক থেকেও দেশটিতে জীবনধারণের মান এশিয়ার অন্য দেশ থেকে অনেকটা উন্নত। দেশটির অপরাধ সূচক ২৪ দশমিক ৪ এবং শান্তি সূচক ২ দশমিক ১০১। এশিয়ায় অন্যতম বিদ্যাপীঠ পিকিং ইউনিভার্সিটি ওয়ার্ল্ড কিউএস র‍্যাংকিং-এ ১৭ নম্বরে। সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির অবস্থান ২৫ এবং ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটি রয়েছে ৪৪ নম্বরে। ৫০তম স্থানে আছে ফুডান ইউনিভার্সিটি আর তার পরেরটি সাংহাই জিয়াও টং ইউনিভার্সিটি।\

চীনে আবেদনের পূর্বশর্ত

স্নাতকে ভর্তির জন্য ডিপ্লোমা, উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের সনদধারী হতে হবে। স্নাতকোত্তরের জন্য লাগবে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি। অপর দিকে স্নাতকোত্তর শেষ করে আবেদন করা যাবে পিএইচডির জন্য।

  • এমবিএর জন্য স্নাতকের পাশাপাশি দরকার হবে দুই বছর বা তার বেশি কাজের অভিজ্ঞতা।
  • অতিরিক্ত সংযুক্তি হিসেবে জিম্যাট বা জিআরই স্কোরের প্রয়োজন হতে পারে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রবেশিকা পরীক্ষা বা অনলাইন সাক্ষাৎকার নিতে পারে।
  • ইংরেজি ভাষা যোগ্যতার জন্য আইইএলটিএস একাডেমিক বা টোফেল আইবিটি আবশ্যক।

Higher Education in China

চীনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদার কোর্সগুলো

চীনের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো পিকিং ইউনিভার্সিটি, সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটি, ফুডান ইউনিভার্সিটি, সাংহাই জিয়াও টং ইউনিভার্সিটি, সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না, নানজিং ইউনিভার্সিটি, সিচুয়ান ইউনিভার্সিটি ও হুয়াজং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

স্নাতক বা মাস্টার্সের চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো হলো

আর্কিটেকচার, কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, হিউম্যানিটিস, সোশ্যাল সায়েন্স, ন্যাচারাল সায়েন্স, মেডিসিন, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস, কেমিস্ট্রি, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও ফাইন্যান্স।

চীনে আবেদনের উপায়

  • সাধারণত প্রতিবছর দুটি মৌসুমে ভর্তি নেয় চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর একটি হলো মার্চে, যার সময় শেষ হয় পরের বছরের সেপ্টেম্বরে। আর দ্বিতীয়টি হলো সেপ্টেম্বরে, যার সময়সীমা থাকে পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত। সেপ্টেম্বরের সময়টিতে মার্চের তুলনায় বেশি কোর্স এবং স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ থাকে।
  • সাধারণত দুটি উপায়ে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। একটি হলো সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পোর্টালে বা ই-মেইলের মাধ্যমে। আরেকটি হলো সিইউসিএএসের (ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজ অ্যাডমিশন সিস্টেম অব চীন) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
  • সিইউসিএএস প্ল্যাটফর্মটি মূলত শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। এটি কেবল আবেদনই নেয় না; বরং কোর্স ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি আপলোড, আবেদন ফি প্রদান, আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানা এবং জেডব্লিউ ২০২ ফরম প্রাপ্তি সবই করা যায় এই পোর্টালে।

Higher Education in China

  • জেডব্লিউ ২০২ ফরম: যে বিদেশি শিক্ষার্থীরা ১৮০ দিনের বেশি সময় নিয়ে চীনে পড়তে আসেন, তাঁদের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই ফরম জারি করা হয়। এর আওতাভুক্ত প্রোগ্রামের মধ্যে রয়েছে ফুলটাইম ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি প্রোগ্রাম এবং এক বছরের ভিজিটিং বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম। ভর্তির আবেদন অনুমোদিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পোর্টাল থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে জেডব্লিউ ২০২ ফরম পাঠানো হয় প্রার্থীকে। এটি প্রিন্ট করে পরবর্তী ভিসা–সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করা যায়। এখানে উল্লেখ্য, ফরম প্রাপ্তির পুরো প্রক্রিয়াটির জন্য অবশ্যই ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করা আবশ্যক। স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পাদন করা যাবে না।

আবেদনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • উচ্চমাধ্যমিক বা ডিপ্লোমা অথবা সমমানের পরীক্ষা সনদ ও মার্কশিট (স্নাতকের জন্য);
  • স্নাতক সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট (স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির জন্য);
  • বৈধ পাসপোর্টের ফটোকপি;
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি;
  • ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ (আইইএলটিএস একাডেমিক বা টোফেল আইবিটি স্কোর);
  • রিকমেন্ডেশন লেটার (স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির জন্য);
  • গ্যারান্টি লেটার (শিক্ষার্থীর মা–বাবা বা অভিভাবকের সই করা একটি ঘোষণাপত্র যেখানে উল্লেখ থাকবে যে তিনি/তাঁরা শিক্ষার্থীর চীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ও প্রবিধান মেনে চলার দায়িত্ব নিয়েছেন)।
  • গবেষণা প্রস্তাব (পিএইচডির জন্য)।
  • ভর্তি ফি পরিশোধের রসিদ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেদে ফি সাধারণত ৮০ থেকে ১৫০ মার্কিন ডলারের মধ্যে হয়ে থাকে।

স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদনের উপায়

  • স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির মতো দীর্ঘমেয়াদি স্টাডি প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে চীনের এক্স-১ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এই ভিসার মাধ্যমে ৬ মাস বা ১৮০ দিনের বেশি চীনে বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায়।
  • চীনে প্রবেশের নির্ধারিত তারিখের ন্যূনতম এক মাস আগে থেকে এই ভিসার জন্য আবেদন করা উচিত। তবে তিন মাস আগে থেকে আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু করা ঠিক নয়। কেননা, এ ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে চীনে প্রবেশের মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ তিন মাস (কর্মদিবস গণনার সাপেক্ষে)। সে ক্ষেত্রে খুব আগে আবেদন করার পরেও দেশ ত্যাগের আগেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যেতে পারে। যেমন উদ্দেশ্য যদি হয় পয়লা অক্টোবর চীনে প্রবেশ করা, তাহলে ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার সর্বোত্তম সময় হবে পয়লা সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি কোনো সময়ে।
  • এক্স-১ ভিসার আবেদন করতে হবে সম্পূর্ণ অনলাইনে। এর জন্য চীনা ভিসা সেন্টারের ওয়েবসাইট -এ গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অতঃপর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পুরো অনলাইন আবেদনটি সম্পন্ন করতে হবে।
  • পরিশেষে ‘পাসপোর্ট টু বি সাবমিটেড’ স্ট্যাটাস প্রদর্শন করলে আবেদনপত্রের প্রথম এবং শেষ পৃষ্ঠাটির একটা প্রিন্ট নিতে হবে। শেষ পৃষ্ঠায় আবেদনকারী স্বহস্তে তারিখসহ সই করবেন।

Higher Education in China

ভিসার আবেদনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ভিসা আবেদনকেন্দ্রে সাক্ষাৎকারের সময় সই করা আবেদনপত্রের সঙ্গে যে নথিগুলো নিয়ে যেতে হবে, সেগুলো হলো—

  • পাসপোর্ট (দুটি খালি পৃষ্ঠাসহ চীনে পৌঁছার দিন থেকে ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদসম্পন্ন);
  • সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে সদ্য তোলা রঙিন ছবি। (আকার ৪৮/৩৩ মিলিমিটার);
  • চীনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অফার লেটার;
  • ফরম জেডব্লিউ ২০২;
  • স্কলারশিপ বা স্পন্সরশিপ পেয়ে থাকলে তার প্রমাণপত্র। এখানে ব্যাংক স্টেটমেন্টের মাধ্যমে দেখাতে হবে যে চীনে পড়াশোনার জন্য কমপক্ষে প্রথম বছরের তহবিল ২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ;
  • ভর্তির আবেদনের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার যে সনদগুলো দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো এক কপি
  • ব্যক্তিগত বিবৃতি বা অধ্যয়ন পরিকল্পনা
  • প্রতিটি নথির ফটোকপির সঙ্গে তার মূলকপিগুলো সঙ্গে নিতে হবে। কোনো নথি বাংলায় হলে তা ইংরেজিতে নোটারাইজ করে নিতে হবে।

Higher Education in China

সাক্ষাৎকার ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন

আবেদনের যাবতীয় কাগজ জমা দিতে চলে যেতে হবে ঢাকায় চীনা ভিসা আবেদনকেন্দ্রে। আসার আগে ভিসা ফর চায়না পোর্টালের অ্যাকাউন্টটিতে ‘পাসপোর্ট টু বি সাবমিটেড’ স্ট্যাটাস দেখাচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়া জরুরি। চীনা ভিসা আবেদনকেন্দ্রের ঠিকানা—তৃতীয় তলা, প্রসাদ ট্রেড সেন্টার, ৬ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, বনানী, ঢাকা।

  • সাধারণত সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত নথি জমা নেওয়া হয়। এ সময় সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি প্রার্থীর আঙুলের ছাপ ও ছবি তোলা হয়। এরপর যাবতীয় কাজ শেষে আবেদনকারীকে একটি পিকআপ ফরম দেওয়া হবে। ভিসার সিলসহ পাসপোর্ট সংগ্রহের সময় অবশ্যই এই ফরমটি দেখাতে হবে। সাধারণত সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভিসা সরবরাহ করা হয়।

চীনে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি ও মেয়াদ

  • সাক্ষাৎকারের দিন আবেদনকারীকে ভিসা আবেদনকেন্দ্রের পরিষেবা ফিসহ ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি নগদ দিতে হবে।
  • চীনে সিঙ্গেল এন্ট্রির জন্য রেগুলার ভিসা ফি ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং পরিষেবা ফি ৪ হাজার ৫০ টাকা। মোট ৬ হাজার ৪৫০ টাকা এবং এই খরচে প্রক্রিয়াকরণে সময় লাগে চার কার্যদিবস।
  • তিন কার্যদিবসের মধ্যে ভিসা পেতে হলে ভিসা ফি বাবদ খরচ হবে ৫ হাজার ১০০ টাকা এবং পরিষেবা ফি ৬ হাজার ৭০ টাকা; মোট ১১ হাজার ১৭০ টাকা।
  • ডবল এন্ট্রিসহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসার ফি এই লিংকে পাওয়া যাবে—

চীনে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাচেলর প্রোগ্রামে গড়পড়তায় খরচ হয় বছরে ২০ থেকে ৪০ হাজার ইউওয়ান। এটি প্রায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ৭০৩ ইউয়ান (১ ইউয়ান=১৬ দশমিক ৪৪ টাকা) থেকে ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৫ টাকার সমান। মাস্টার্স কোর্সগুলোর সাধারণ ফি বছরে ৩০ থেকে ৫০ হাজার ইউয়ান, যা প্রায় ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪ থেকে ৮ লাখ ২১ হাজার ৭৫৬ টাকার সমান। আবেদন ফি বাবদ খরচ হতে পারে গড়ে ৬০০ থেকে ৮০০ ইউয়ান (প্রায় ৯ হাজার ৮৬১ থেকে ১৩ হাজার ১৪৮ টাকা)।

Higher Education in China

জীবনযাত্রার ব্যয়ের দিক থেকে বেইজিং, সাংহাই ও গুয়াংজুর মতো শহরগুলো বেশ ব্যয়বহুল। সেখানে চেংডু, জিয়ান ও হারবিনের মতো শহরগুলো বেশ সাশ্রয়ী। সব মিলিয়ে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ভাড়াসহ খরচ পড়তে পারে মাসে ৪ থেকে ৮ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ৬৫ হাজার ৭৪১ থেকে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৯ টাকা)।

চীনে স্কলারশিপের সুবিধা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন ও জীবনযাত্রাকে সহজলভ্য করতে চীনে রয়েছে বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। এর মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (সিজিএস) পরিচালিত হয় চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডক্টরাল—সব ধরনের প্রোগ্রামকে উদ্দেশ করেই এর প্রকল্পগুলো চালু হয়। এগুলোর মধ্যে টিউশন, বাসস্থান, জীবনযাত্রার খরচ এবং চিকিৎসা বিমা মিলিয়ে বছরে ৩০ হাজার ইউয়ান পাওয়া যায়।

এই সিজিএসগুলো বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন চীনা ও অন্য দেশের সরকার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে চুক্তির অধীন থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বাইলেটারাল প্রোগ্রাম। ইউনেসকোর স্পন্সরে উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে গ্রেট ওয়াল প্রোগ্রাম। এইউএন প্রোগ্রাম আসিয়ানভুক্ত (এএসইএএন) দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের চীনে পড়াশোনার খরচ বহন করে।

এ ছাড়া অনেক চীনা বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব উদ্যোগে বৃত্তি দিয়ে থাকে। যেমন সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ সম্পূর্ণ টিউশন ফিসহ মাসে ৩ হাজার ইউয়ান (প্রায় ৪৯ হাজার ৩০৬ টাকা) দেয়। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তিতে রয়েছে সম্পূর্ণ অধ্যয়ন খরচসহ মাসে ২ হাজার ইউয়ান (প্রায় ৩২ হাজার ৮৭১ টাকা)। ফুদান ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস স্কলারশিপে পুরো অধ্যয়ন খরচের পাশাপাশি রয়েছে প্রতি মাসে ২ হাজার ৫০০ ইউয়ানের উপবৃত্তি। এটি প্রায় ৪১ হাজার ৮৮ টাকার সমতুল্য। ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালীন পূর্ণ খরচসহ প্রতি মাসে ২ হাজার ২০০ ইউওয়ান (প্রায় ৩৬ হাজার ১৫৮ টাকা) করে উপবৃত্তি দেয়।

Higher Education in China

চীনে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার আর্থিক ব্যবস্থাপনা

অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪ ঘণ্টা করে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। এই খণ্ডকালীন চাকরিগুলোতে গড়ে ঘণ্টাপ্রতি আয় হয় ১০ থেকে ৫০ ইউয়ান (প্রায় ১৬৫ থেকে ৮২২ টাকা)। এই মজুরি প্রতি মাসে গড়ে ১ থেকে ৫ হাজার ইউয়ান (প্রায় ১৬ হাজার ৪৩৫ থেকে ৮২ হাজার ১৭৬ টাকা) পর্যন্ত হয়।

অবশ্য এভাবে কাজ করার জন্য শিক্ষার্থীদের বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকার পাশাপাশি তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাজের অনুমতি নিতে হয়।

এ চাকরি ছাড়াও নিত্যনৈমিত্তিক জীবনযাত্রার খরচ বাঁচাতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে পারেন। যেমন সাশ্রয়ী মূল্যের খাবারের দোকানগুলো প্রতিদিনের খাবার খরচ অনেকটা কমাতে পারে।

তা ছাড়া ইউনিভার্সিটির ক্যানটিনে ১০ ইউয়ানের (প্রায় ১৬৫ টাকা) মধ্যেই ভরপেট খাওয়া যায়।

ফোনের বিল বাঁচানোর জন্য চায়না মোবাইল এবং চায়না ইউনিকমের মতো কোম্পানিগুলোর চার্জ যথেষ্ট বাজেট-বান্ধব। প্রতি মাসে এগুলোর বেসিক প্যাকেজ শুরু হয় প্রায় ৫০ ইউয়ান থেকে। স্বল্প খরচে যাতায়াতের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হচ্ছে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা। বাস ও মেট্রোর মাসিক পাসের মূল্য সাধারণত প্রায় ১০০ ইউয়ান।

চীনে পড়াশোনার পর চাকরি ও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ

চীনে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিকে বলা হয় ডি টাইপ ভিসা। এ ভিসায় ১৮ বছরের কম বয়সীরা ৫ বছর এবং প্রাপ্তবয়স্করা ১০ বছর চীনে বসবাসের অনুমতি পান। এই পারমানেন্ট রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদনপ্রক্রিয়ায় খরচ হবে ১ হাজার ৮০০ ইউয়ান (প্রায় ২৯ হাজার ৫৮৪ টাকা)। এ ছাড়া এর জন্য কিছু শর্ত রয়েছে—

Higher Education in China

  • প্রার্থীকে ওয়ার্ক পারমিট থাকা অবস্থায় ন্যূনতম চার থেকে পাঁচ বছর চীনে থাকতে হবে এবং তাঁকে অবশ্যই একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী হতে হবে।
  • প্রার্থীকে তাঁর কাজের মাধ্যমে চীনের যেকোনো সেক্টরে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে হবে।
  • উপরন্তু বছরে একটানা অন্তত ৯ মাস চীনের বাইরে যাওয়া যাবে না।
  • ওয়ার্ক পারমিটের প্রথম শর্ত হলো একটি চাকরি জোগাড় করা বা নিজের ব্যবসা শুরু করা। এ শর্ত পূরণের সময়ের জন্য অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা তাঁদের স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারে। এর জন্য মেয়াদ শেষ হওয়ার সাত দিন আগেই তাদের পিএসবি (পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরো এন্ট্রি অ্যান্ড এক্সিট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিস) বরাবর আবেদন করতে হবে।
  • ওয়ার্ক পারমিটে মূলত পয়েন্ট সিস্টেমের ভিত্তিতে টিয়ার-এ, বি এবং সি—এই ৩ স্তরের ভিসা দেওয়া হয়। ভিসার স্তর নির্ধারণ করা হয় প্রার্থীর যোগ্যতা, বয়স, কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং বার্ষিক বেতনের ভিত্তিতে।
  • স্নাতক শেষে শিক্ষার্থীরা এই টিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে এক বছরের ভিসার বৈধতা দেওয়া হবে। এর পর পর্যায়ক্রমে তিনি আরও এক বছরের জন্য ভিসা রিনিউ করতে পারবেন। এভাবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া যায়।
  • যেকোনো টিয়ার ভিসার জন্য এসএএফইএ (স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সপার্ট অ্যাফেয়ার্স) নিয়ন্ত্রিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মের (ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস সিস্টেম) মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে হয়।

Higher Education in China

চীনে ফ্রেশ গ্রাজুয়েটদের জন্য আকর্ষণীয় বেতনের চাকরির সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে প্রযুক্তি, ফাইন্যান্স, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রকৌশলের মতো খাতে। চীনের শীর্ষ নিয়োগদাতা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে আলিবাবা, টেনসেন্ট, হুয়াওয়ে, বাইদু ও চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক। এগুলোতে মাসিক বেতন কমপক্ষে ২৫ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৮৫ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি প্রায় ৪ লাখ ১০ হাজার ৮৭৮ থেকে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৯৮৫ টাকার সমান। তথ্যসূত্র: ইউএনবি নিউজ

চীনে পড়তে যেতে চাইলে যে ১০ প্রশ্নের উত্তর জেনে রাখা ভালো

১. এইচএসসির পরই কি স্নাতকের জন্য চীনে যাওয়া যায়?
অধিকাংশ বিদেশি শিক্ষার্থী স্নাতক প্রোগ্রামের অধীনেই চীনে পড়তে আসেন। চীনা ও ইংরেজি—দুই মাধ্যমেই পড়া যায়। তবে চীনা মাধ্যমে পড়তে হলে আগে থেকেই চীনা ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। অথবা এখানে এসে ১ বছর চীনা ভাষা শিখে তারপর মূল কোর্সে প্রবেশ করতে হয়। চীনা ভাষায় পড়লে বেশ কয়েকটি সুবিধা আছে। বৃত্তি পাওয়া যেমন সহজ, বৃত্তির সুযোগ-সুবিধাও তেমনি বেশি। প্রকৌশল, মেডিকেল, ব্যবসায় শিক্ষাসহ সব ধরনের বিষয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ এখানে আছে। তবে মেডিকেল স্কুলগুলোয় পড়তে চাইলে আগে থেকেই বিএমডিসির (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়।

২. চীনে পড়তে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো বৃত্তি কোনটি?
সবচেয়ে ভালো বৃত্তি হলো চীনা সরকারি বৃত্তি (সিএসজি)। চায়না স্কলারশিপ কাউন্সিল থেকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। www.campuschina.org ওয়েবসাইটে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৃত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। এই বৃত্তির জন্য আবেদন করার দুটি পথ আছে। সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন অথবা বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে আবেদন। টিউশন ফি, হোস্টেল ফি, স্বাস্থ্যবিমা—সবই বৃত্তির আওতায় পড়ে। ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডির জন্য যথাক্রমে ২ হাজার ৫০০, ৩ হাজার এবং ৩ হাজার ৫০০ ইউয়ান দেওয়া হয়। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় যথাক্রমে ৩৬ হাজার, ৪৩ হাজার এবং ৫০ হাজারের সমতুল্য। বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস থেকে আবেদন (টাইপ এ) করলে চীনে যাওয়া এবং ফিরে আসার খরচ দেওয়া হয়। তবে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আবেদন করলে এ সুযোগ থাকে না।

Higher Education in China

৩. চীনা সরকারি বৃত্তির জন্য কী কী যোগ্যতা লাগে?
বৃত্তি পাওয়া খুব একটা কঠিন না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা আছে। সব স্কুলেই স্নাতক আবেদনের জন্য উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতক এবং পিএইচডির জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাগে। প্রথম কাতারের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আইইএলটিএস বা এইচএসকে (চীনা ভাষার দক্ষতা পরীক্ষা) দরকার হয়। তবে কেউ যদি ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করে থাকে, তাহলে এমওআই (মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন) সনদ দিয়ে আবেদন করা যাবে। এবার বলি—কোন কোন বিষয় বৃত্তি পেতে সাহায্য করে। প্রথমত, একটা ভালো ‘স্টাডি প্ল্যান’ লেখা খুব জরুরি। সহশিক্ষা কার্যক্রমকে এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়। চীনা ভাষা বা সংস্কৃতির ওপর কোনো কোর্স বা অভিজ্ঞতা থাকলে সংযুক্ত করা যেতে পারে। মাস্টার্স বা পিএইচডি লেভেলে আবেদনের জন্য যদি পাবলিকেশন থাকে, সংযুক্ত করা যাবে। এটা বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়। গবেষণার অভিজ্ঞতাকে খুবই প্রাধান্য দেওয়া হয়। চীনা সরকারি বৃত্তির জন্য কমপক্ষে দুটি ‘রিকমেন্ডেশন লেটার’ প্রয়োজন হয়। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক বৃত্তির কোটা থাকে। তাই পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে বৃত্তির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা জরুরি।

৪. আর কী কী বৃত্তি আছে?
ব্যাচেলর বা মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই টিউশন ফি মওকুফের বৃত্তি আছে। স্নাতক শ্রেণিতে ইংরেজি মাধ্যমে পড়লে এই বৃত্তি তুলনামূলক সহজে পাওয়া যায়। চীনের প্রতিটি প্রদেশের আলাদা বৃত্তি আছে। এই বৃত্তিগুলোকে বলা হয় প্রভিন্সিয়াল স্কলারশিপ। সাধারণ বৃত্তিগুলোর পাশাপাশি পিএইচডি ফেলোশিপ বা বিশেষ ট্যালেন্ট বৃত্তি আছে। এগুলো পুরোপুরি গবেষণানির্ভর প্রোগ্রামগুলোর জন্য। এই ফেলোশিপগুলোতে টাকার পরিমাণ সাধারণ বৃত্তির চেয়ে অনেক বেশি থাকে। এর বাইরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বেল্ট অ্যান্ড রোড বৃত্তি, মফকম বৃত্তি, এন্টারপ্রাইজ বৃত্তিসহ নানা ধরনের বৃত্তি চালু আছে।

৫. চীনে পড়তে হলে চীনা ভাষা কি শিখতেই হয়?
চীনে পড়তে হলে চীনা ভাষা শেখাটা বাধ্যতামূলক না। তবে এখানে জীবনযাপন সহজ করার জন্য চীনা ভাষা শেখা জরুরি। চীনে ইংরেজি মাধ্যমে পড়তে এলেও বিশ্ববিদ্যালয় জেনারেল কোর্স হিসেবে ১-২টি চীনা ভাষার কোর্স দিয়ে থাকে। এগুলো থেকে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা যায়। আমাদের দেশে অনেকেরই চীনা ভাষাভীতি আছে। কিন্তু এখানে এলে ভাষা শেখাটা সহজ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চীনা ভাষার অনেক ফ্রি কোর্স অফার করে। ওগুলোতে অংশ নিলেও ধীরে ধীরে ভাষাটা আয়ত্তে চলে আসে। আর ওই ক্লাসগুলো খুবই মজার হয়। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা শেখাটা বাধ্যতামূলক। যাঁরা চীনা ভাষা জানেন, তাঁরা চাকরির বাজারে আলাদা কদর পান। তাই আমার মনে হয় ভাষাটা শিখে নেওয়াই ভালো। প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ চীনা ভাষায় কথা বলে। অতএব নিশ্চয়ই এমন একটা ভাষার সুবাদে আপনার সামনে খুলে যেতে পারে সুযোগের অনেক দরজা।

৬. চীনে জীবনযাত্রার ব্যয় কেমন?
নির্ভর করে শহরের ওপর। বেশির ভাগ ছোট ও মাঝারি শহরগুলোতে খরচ অনেক কম। অনেকটা আমাদের ঢাকার মতো। তবে বড় শহরগুলো, যেমন বেইজিং, সাংহাই—এগুলো বেশ ব্যয়বহুল। ছোট বা মাঝারি মানের শহরগুলোতে থাকলে ১০ হাজার টাকায় খাবার খরচ হয়ে যায়। হোস্টেল ফি তুলনামূলক কম। প্রতি মাসে ৪০০-৬০০ ইউয়ান। টাকার অঙ্কে ৬-৮ হাজার টাকার মতো। বেশির ভাগ স্কুলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রান্নাঘর থাকে। তাই কেউ চাইলে তাঁর পছন্দমতো খাবার রান্না করে খেতে পারবেন।

Higher Education in China

৭. কেউ বৃত্তি ছাড়া পড়তে চাইলে খরচ কেমন?
বৃত্তি ছাড়া পড়ার জন্য মেডিকেল স্কুলগুলোয় খরচ একটু বেশি। তবে প্রকৌশল, ব্যবসায় শিক্ষাসহ অন্যান্য অনুষদে লেখাপড়ার জন্য খরচ কিছুটা কম। টিউশন ফি একেক স্কুলে একেক রকম। স্নাতক শ্রেণিতে পড়ার জন্য বছরে ১৫ হাজার ইউয়ান থেকে শুরু করে ৫০ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত খরচ হতে পারে। মাঝারি মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সাধারণত ১৫-৩০ হাজারের মধ্যে (প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার টাকা) হয়ে যায়।

৮. ঘরে বসে কীভাবে চীনা ভাষা শিখতে পারি?
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কনফুশিয়াস ইনস্টিটিউট, ঢাবির ভাষা ইনস্টিটিউটে গিয়ে শিখতে পারলে সবচেয়ে ভালো। এ ছাড়া চীনের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে বিদেশিদের জন্য কিছু কোর্স অফার করে। এগুলোকে বলে ‘চায়না ব্রিজ উইন্টার ক্যাম্প’ বা ‘চায়না ব্রিজ সামার ক্যাম্প’। এই ক্যাম্পগুলোতে কম্প্রিহেনসিভ চাইনিজ কোর্স থাকে। এর মাধ্যমে আপনি এইচএসকে-১ (চীনা ভাষার দক্ষতার মাত্রা) থেকে এইচএসকে-৬ সম্পন্ন করতে পারবেন। এ ছাড়া এসব অনলাইন কোর্সে চীনা সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচিত হওয়ার সুযোগ থাকে। কোর্সগুলোর জন্য কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় টাকা নেয়, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আবার বিনা মূল্যেই করায়। ঘরে বসে ইউটিউবেও শিখতে পারেন। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে শেখার সুবিধা হলো, আপনাকে ওরা সনদ দেবে। পরে বৃত্তি পেতে বা ভর্তি হতে গেলে এই সনদ খুব কাজে লাগে।

৯. পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ আছে কি?
চীনে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ আগে ছিল না। দেড়-দুই বছর হয় সরকার অনুমতি দিচ্ছে। তবে প্রক্রিয়াটা জটিল। অন্তত এক বছর পড়ালেখা করে তারপর বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুপারভাইজারের অনুমতি নিয়ে আপনি খণ্ডকালীন কাজ করতে পারেন। বাংলাদেশিদের সঙ্গে যেহেতু চীনাদের অনেক রকম ব্যবসা আছে, তাই কিছু কিছু কাজের সুযোগও আছে। কিন্তু সত্যি বলতে কি, এখানে পড়ালেখার চাপ এত বেশি, বিশেষ করে স্নাতক পর্যায়ে, পড়া সামলে কাজ করা বেশ কঠিন।

১০. চীনে পড়ালেখা করে সে দেশে চাকরির সুযোগ কেমন?
চীনের লেখাপড়ার মান ভালো এবং বাস্তবমুখী। শিক্ষার্থীরা যখন কোনো চীনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়, তারা একটা ভালো দক্ষতা নিয়েই বের হয়। একটা বড় অংশের ছাত্রছাত্রী ক্যাম্পাসে থাকাকালেই চাকরির অফার পেয়ে যান। পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফিরেও চাকরির সুযোগ আছে। বহু চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। চীনের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করলে এই কোম্পানিগুলোতে চাকরির সুযোগ থাকে। এ ছাড়া চীনেও বিদেশিদের জন্য একটা বিশাল চাকরির বাজার আছে। চীনের বড় কোম্পানিগুলো পৃথিবীর নানা দেশের সঙ্গে ব্যবসা করে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য নানা রকম টেকনিক্যাল এবং নন-টেকনিক্যাল কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন হয়। এসব কোম্পানিতে বিদেশিরা সহজে চাকরি করতে পারেন।

Leave a Comment