Higher Education in Russia with Full Scholarships

Higher Education in Russia – A lot of Bangladeshi students go to abroad for higher education. The cost of education and living standards of Russia is relatively lower than in western countries.

Higher Education in Russia

প্রতিবছরই বেশ কিছু শিক্ষার্থী অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে পড়তে যান রাশিয়ায়। রাশিয়ায় পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার খরচ পশ্চিমা অপর দেশগুলোর চেয়ে তুলনামূলক কম। তাই বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহীদের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। যেসব শিক্ষার্থী রাশিয়াকে পড়ার জন্য বেছে নিতে চান, তাঁদের জন্য এ বৃত্তি সুযোগ।

গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিজ’ সমিতি ও রাশিয়ান শিক্ষা ও বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি দিচ্ছে। ওপেন ডোরস রাশিয়ান নামের এই স্কলারশিপ অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রির জন্য প্রদান করা হবে। এ স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীদের অনলাইন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য প্রদান করা হয় এই বৃত্তি। এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও রানারআপরা রাশিয়ার যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন। পড়াশোনার জন্য টিউশন ফি দিতে হবে না। টিউশন ফি বহন করবে রাশিয়ার সরকার।

 বৈশ্বিক গবেষণা এবং শিক্ষাব্যবস্থায় রাশিয়ার অবস্থান বাড়ানোই এ স্কলারশিপের উদ্দেশ্য। ওপেন ডোরস (উন্মুক্ত দরজা) হলো রাশিয়ার স্কলারশিপ প্রকল্প, যা দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউশন–ফ্রি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ দিয়ে থাকে। ডক্টরাল ট্র্যাকটিতে একটি অতিরিক্ত রাউন্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের সম্ভাব্য গবেষণা উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিতে হবে। যদি সাক্ষাৎকারটি সফল হয়, তবে অংশগ্রহণকারী যাঁরা তাঁদের মনোনীত করেছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে একজন গবেষণা উপদেষ্টা বেছে নিতে পারবেন।Education in Russia

স্কলারশিপে যে যে বিষয়ে পড়তে পারবেন শিক্ষার্থীরা

  •  কম্পিউটার ও ডেটা সায়েন্স
  •  ব্যবসা ব্যবস্থাপনা
  •  শিক্ষা
  •  রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
  •  জীববিজ্ঞান এবং জৈব প্রযুক্তি
  •  স্নায়ুবিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞান
  •  ভাষাতত্ত্ব এবং আধুনিক ভাষা
  •  রসায়ন ও ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স
  •  অর্থনীতি এবং একনোমেট্রিক্স
  •  প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি
  •  ক্লিনিক্যাল মেডিসিন ও জনস্বাস্থ্য
  •  আর্থ সায়েন্স
  •  গণিত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
  •  শারীরিক বিজ্ঞান

Higher Education in Russia

সুযোগ–সুবিধা

যাঁরা এই স্কলারশিপ পাবেন, তাঁরা রাশিয়ার যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ পাবেন। সেই সঙ্গে তাঁদের পড়ালেখার যাবতীয় খরচ রাশিয়ার সরকার বহন করবে। অর্থাৎ তাঁরা ১০০ শতাংশ স্কলারশিপ পাবেন।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

  •  পাসপোর্টের কপি
  •  একাডেমিক সব সার্টিফিকেট ও নম্বরপত্র
  •  রেফারেন্স লেটার
  •  ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ। আইএলটিএসে ওভারঅল ব্যান্ডস্কোর ৬.০ থাকতে হবে। তবে যাঁদের মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশনের সনদ রয়েছে, তাঁদের আইএলটিএস স্কোরের প্রয়োজন নেই।
  • স্টেটমেন্ট অব পারপাস।

আবেদনের যোগ্যতা

ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী (মাস্টার্স ট্র্যাকের জন্য) বা মাস্টার্স ডিগ্রি (ডক্টরাল ট্র্যাকের জন্য) অংশগ্রহণকারীদের রাশিয়ান বা ইংরেজি ভাষায় পড়ালেখা করতে হবে। তাই যেকোনো এক ভাষায় দক্ষ হতে হবে। রাশিয়ান ছাড়া সবাই আবেদন করতে পারবেন এ বৃত্তির জন্য।

রাশিয়ায় স্কলারশিপের বিষয়ে ঢাকায় সেমিনার

ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের আয়োজনে গত ০৯/১০/২০২৪ তারিখে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হতে ইচ্ছুক বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারীদের জন্য রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের বৃত্তি কোটার আওতায় রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিয়ে একটি শিক্ষামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল দভোইচেনকভ অংশগ্রহণকারীদের রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোটার মধ্যে উচ্চতর শিক্ষা কার্যক্রম এবং অতিরিক্ত পেশাগত শিক্ষার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম (ইডুকেশন ইন রাশিয়া.কম) প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত  করেন।

তিনি বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে রাশিয়া বাংলাদেশে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরের পর বছর ধরে এই কোটার আওতায় বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে গ্রহণ করেছে, যা তাদের বিশ্বমানের শিক্ষায় নিবিষ্ট হওয়ার এক অনন্য সুযোগ দিয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা কেবল একাডেমিক জ্ঞান নিয়েই নয়, মূল্যবান অভিজ্ঞতা নিয়েও দেশে ফিরে আসে যা তাদের দিগন্তকে প্রশস্ত করে এবং তাদের দেশের ভবিষ্যতে অবদান রাখে।

পাভেল দভোইচেনকভ রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা এবং সরকার ও ব্যবসায় উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশি স্নাতকদের অর্জন এবং রাশিয়ায় শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের আবেদনকারী তরুণদের পেশাগত সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। রাশিয়ান ফেডারেশনের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ৭৫০ টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার বিভিন্ন স্তর জুড়ে ৬৫০ টিরও বেশি বিশেষত্ব নিয়ে গঠিত।

অনুষ্ঠানে ঢাকার রাশিয়ান হাউসের রুশ ভাষা কোর্স প্রশিক্ষক এবং বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টরের উপস্থাপনা ছিল যারা রাশিয়ায় তাদের শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। সেমিনার চলাকালীন, মস্কোর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির লেকচারার অন্তর মাহামুদুল হাসান এবং ইনফরমেশন টেকনোলজির একজন ডক্টর অফ সায়েন্স রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে অনলাইনে অন্তর্দৃষ্টি শেয়ার করেন এবং রাশিয়ায় অধ্যয়নের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণকারীরা রাশিয়ার শিক্ষা সম্পর্কে ভিডিও উপস্থাপনা দেখেন এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন সম্পর্কে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পান।

আগামী শিক্ষাবর্ষে কোটার আবেদন প্রক্রিয়া ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে।

অংশগ্রহণকারীরা রাশিয়ান হাউসের কার্যক্রম তার কোর্সের মাধ্যমে রাশিয়ান ভাষা অধ্যয়নের সুযোগ এবং বিভিন্ন যুব প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ সম্পর্কেও অবহিত হন।

রাশিয়ায় পড়ালেখা আর পরীক্ষার ধরন আলাদা

উচ্চমাধ্যমিকের পরপরই বৃত্তি নিয়ে অনেকে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যান। হাসিব সিফাত যেমন রাশিয়ার মস্কো ইনস্টিটিউট অব ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়ছেন। পড়ুন তাঁর অভিজ্ঞতা।

২০২০ সালে রুশ সরকারের বৃত্তি পাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমার যাত্রা। পুরো এক বছর ধরে রুশ ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর প্রস্তুতিমূলক কোর্স করে ২০২১ সাল থেকে স্নাতকের পড়ালেখা শুরু করি।

Higher Education in Russia

এই বৃত্তি পেতে হলে দুটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল। দ্বিতীয়ত, যে বিষয়ে রাশিয়ায় পড়তে চান, সে বিষয়ে পড়ার পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ বা আগ্রহ। এ ছাড়া স্কুল-কলেজে সহশিক্ষা কার্যক্রমের অভিজ্ঞতাও ‍গুরুত্বপূর্ণ। আমি বেশ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, রাশিয়ায় পড়ব। তাই রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার ফেসবুক পেজে চোখ রাখছিলাম। এখানেই সাধারণত বৃত্তির নোটিশ ও বৃত্তি–সম্পর্কিত সেমিনারের হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় সব নথি প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে এডুকেশন ইন রাশিয়ার ওয়েবসাইটে আবেদন করাসহ প্রতিটি ধাপে তারা খুব ভালোভাবে সাহায্য করে। তারপর একটি নির্দিষ্ট দিনে ভাইভা দিতে হয়। বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে এই ভাইভাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিজের জীবনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্যের পাশাপাশি বিষয় নির্বাচনের কারণ সাবলীলভাবে তুলে ধরতে পারলে বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

আমি এখানে রুশ ভাষায় পড়ছি। তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষাতেও পড়ার সুযোগ আছে। আমার বিভাগে ৮০ জনের বেশি রুশ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বিদেশি হিসেবে অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই বলতে হয়। এখানে পড়ালেখা ও পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি অন্যান্য দেশের তুলনায় আলাদা আর কঠিন হলেও যে বিষয়টা আমাকে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করে, তা হলো এখানকার শিক্ষার্থীদের হার না মানা মনোভাব আর কঠোর পরিশ্রম। তৃতীয় বর্ষে ওঠার পর ক্যাম্পাসে তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের একটা সক্রিয় গবেষণাদলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে আমরা পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের গবেষণার বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।

বৃত্তি নিয়ে নতুন দেশে নতুন ভাষায় পড়ালেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। নতুন পরিবেশ, নিয়মনীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এখানে শিক্ষাব্যবস্থা একটু আলাদা। সময় ব্যবস্থাপনার দিকে সব সময় খেয়াল রাখতে হয়। কেউ যদি শুরুতেই নেটওয়ার্কিংটা ভালো করতে পারে, তাহলে তাঁর জন্য অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়।

উচ্চশিক্ষার জন্য রাশিয়ায় যেতে চাইলে যে ১০ প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি

১. স্নাতকের জন্য কি রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায়?

বাংলাদেশে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পড়াশোনা শেষ করেই রাশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আবেদন করা যায়। যাঁদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার আগ্রহ আছে, তাঁদের জন্য নানা রকম সুযোগ আছে। রাশিয়ার বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির রকেট কমপ্লেক্স অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী শাহজালাল জোনাক বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের “রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকা”র মাধ্যমে রুশ সরকারের শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন করি। আমার মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছা। এখানে এ–সংক্রান্ত অনেক সুযোগ আছে।’

Higher Education in Russia

২. রাশিয়ায় পড়ার জন্য সবচেয়ে ভালো বৃত্তি কোনটি?

রাশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রুশ সরকারের বৃত্তি নিয়ে পড়া যায়। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার মাধ্যমে বৃত্তির আবেদন জমা দিতে হয়। রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার শিক্ষা বিভাগের প্রধান সৈয়দ বজলুল হাসান জানান, রুশ সরকারের দেওয়া বৃত্তির অধীন প্রতিবছরই বাংলাদেশের ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থী সে দেশে পড়ার সুযোগ পান। আগামী বছর এই সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে। সরকারি এই বৃত্তির অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দেওয়া হয়। হোস্টেল ফিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও সুবিধা পাওয়া যায়। উচ্চশিক্ষার বিষয়ে সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে ধানমন্ডিতে অবস্থিত রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকাতে।

৩. রুশ সরকারি বৃত্তির জন্য কী কী যোগ্যতা লাগে?

স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে বৃত্তির জন্য যে খুব মেধাবী হতে হয় বা একাডেমিক ফল খুব ভালো হতে হয়, তা কিন্তু নয়। শিক্ষার্থীরা যে যেই বিষয়ের ওপর পড়ছেন, তার ওপর ভিত্তি করে বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। বিজ্ঞান প্রযুক্তি থেকে শুরু করে কৃষি, ব্যবসায় শিক্ষা, সাংবাদিকতাসহ নানা বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। একাডেমিক ফলাফলের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম, খেলাধুলার অর্জন, বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা বৃত্তির বাছাইয়ে ভূমিকা রাখে। গত বছর রাশিয়ার মস্কো ইনস্টিটিউট অব ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়তে যান হুমায়ূন কবীর। তিনি বলেন, ‘আমার মেশিন লার্নিং, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং ইত্যাদি নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহ ছিল। তাই স্নাতকের চতুর্থ বর্ষে পড়ার সময় রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ খুঁজতে থাকি। ওপেন ডোরস অলিম্পিয়াডে বিষয়ভিত্তিক আয়োজনে অংশ নিয়ে আমি বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হই। ওপেন ডোরস অলিম্পিয়াডে সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। যাঁরা বিজয়ী হন, তাঁদের বৃত্তি দেয় রুশ সরকার।’

৪. আর কী কী বৃত্তি আছে?

অনলাইনে ওপেন ডোরস অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তি পেয়ে থাকেন। এই বৃত্তি মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য দেওয়া হয়। রাশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা বৃত্তি আছে। সেসবের মাধ্যমেও প্রতিবছর বহু শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বিস্তারিত: https://od.globaluni.ru

রুশ ভাষা জানলে রাশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয়ে পড়ার সুযোগ থাকে। তবে ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যক্রম চালু আছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষায় কোর্স ও পাঠ্যক্রম পরিচালনা করা হয়। মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হুমায়ূন কবীর মস্কো ইনস্টিটিউট অব ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজিতে ইংরেজিতে পড়ছেন, আবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে আল হাসিব সিফাত পড়ছেন রুশ ভাষায়। শিক্ষার্থীদের নিজের পছন্দের ভাষায় কোর্স বাছাই করার সুযোগ আছে।

৬. রাশিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় কেমন?

স্কল্কোভো ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পিএইচডি গবেষক মাহবুবুর রহমান রাশিয়ায় থেকেই স্নাতক ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকটা বাংলাদেশের মতোই। মাসে ১৫০-২৫০ ডলার (প্রায় ১৪-২৪ হাজার টাকা)। মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হুমায়ূন কবীরের অভিমত, এখানে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। জীবনধারণের খরচ বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যেই আছে। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে বাংলাদেশের তুলনায় ঠান্ডা অনেক বেশি। মাইনাস ১৫-২০ ডিগ্রি সেখানে স্বাভাবিক ব্যাপার।

Higher Education in Russia

৭. বৃত্তি ছাড়া পড়তে চাইলে খরচ কেমন?

নিজস্ব তহবিলে পড়ার সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। স্নাতকের ক্ষেত্রে বছরে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হবে। ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি আলাদা, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দেখে নেওয়া ভালো। রাশিয়ায় গবেষণারত মাহবুবুর রহমান বলেন, রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ এলাকাভেদে একেক রকম।মাস্টার্সে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার মতো খরচ পড়ে। এ ছাড়া পিএইচডি করতে খরচ হবে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা।

৮. ঘরে বসে কীভাবে রুশ ভাষা শিখতে পারি?

ঘরে বসে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রুশ ভাষা শেখার সুযোগ আছে। মস্কো ইনস্টিটিউট অব ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজিতে স্নাতকে প্রথম বর্ষে পড়ছেন আল হাসিব সিফাত। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকাতে রুশ ভাষা শেখার ওপর বিভিন্ন কোর্স চালু আছে। আমি রাশিয়াতে আসার আগে সেখানে রুশ ভাষা শেখার জন্য ভর্তি হই এবং রুশ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি। এখন আমি রুশ ভাষাতেই পড়ছি।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটেও রুশ ভাষা শেখার সুযোগ আছে।

৯. পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ আছে কি?

বৈধভাবে শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ রাশিয়াতে নেই। পিএইচডি গবেষক মাহবুবুর রহমান বলেন, আইনত শিক্ষার্থীদের রাশিয়াতে কাজের কোনো সুযোগ নেই। ছাত্রছাত্রীদের এ জন্যই বৃত্তি দেওয়া হয়, যেন তাঁরা পড়ালেখা ও গবেষণায় মন দিতে পারেন।

Higher Education in Russia

১০. রাশিয়ায় পড়ালেখা করে সে দেশে চাকরির সুযোগ কেমন?

রাশিয়াতে পড়ালেখা শেষ করে কাজের অনেক সুযোগ আছে। বিশেষ করে যাঁরা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পড়ছেন, তাঁদের সুযোগ বেশি। রাশিয়ায় বসবাসরত পিএইচডি গবেষক মাহবুবুর রহমান বলেন, এখানে ব্যাংকিং ও ব্যবসাক্ষেত্রেও কাজের সুযোগ বাড়ছে। যেহেতু রাশিয়ার ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে, তাই আন্তর্জাতিক পেশাজীবীদের কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। মেধাবীদের জন্য রাশিয়ায় কাজের সুযোগ অনেক বেশি বলে জানান স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হুমায়ূন কবীর। তিনি বলেন, এখানে রেড ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়। এই ডিপ্লোমা অর্জন করলে চাকরির বাজারে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে।

আরো পড়ুন।

Leave a Comment