Rohingya issue is a big problem for Bangladesh. Their birth is very high. As a result, the number of Rohingya refugees is increasing rapidly. They create various problems in our country. Because of good understanding, the issue is described in Bengali in the following:
Rohingya issue
রোহিঙ্গা সংকটকে প্রধান উপদেষ্টা টাইম বোমা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই আখ্যা রোহিঙ্গা সংকটের ভয়াবহতার ইঙ্গিত দেয়।
বিগত বছরগুলোতে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া হয়েছে অনেক। কিন্তু টেকসই সমাধানে অগ্রগতি হয়নি। রোহিঙ্গা সমস্যা কোনো দ্বিপক্ষীয় বিষয় নয়। এটিকে মিয়ানমারের সমস্যা হিসেবে অভিহিত করে মিয়ানমারের ভেতর থেকেই এর সমাধান হওয়ার আশায় দিন কেটেছে। এমন ভুল পথে চলার কারণে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সরে গেছে আরও দূরে।
রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ-সংঘাতের চাপে রোহিঙ্গা সমস্যা প্রায় বিস্মৃত হওয়ার পথে ছিল। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভার পরপরই ঢাকায় এলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম। সেই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা ইস্যুকে তুলে ধরা হলো। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রোহিঙ্গা সংকট সামনে এল দুইবার। আসিয়ান নামক আঞ্চলিক ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মালয়েশিয়া।
বাংলাদেশ এখনো এই ফোরামে ঢুকতে পারেনি। আসিয়ানের সদস্যপদ পেলে আসিয়ান ও সার্কের মাঝে বাংলাদেশ সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে বলে মালয়েশিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের কাছে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন। কিন্তু মুমূর্ষু সার্ককে ভারতের একরোখা নীতির চক্কর থেকে কি বের করা যাবে? আশার কথা, মালয়েশিয়া ২০২৫-এ আসিয়ানের সভাপতি হতে যাচ্ছে। কিন্তু এই আশা রোহিঙ্গা সংকটের টাইম বোমাকে কি নিষ্ক্রিয় করতে পারবে?
Rohingya issue
জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের প্রতিবেশী-ভাগ্য সুপ্রসন্ন নয়। এক প্রতিবেশী বাংলাদেশের সবকিছুতে হস্তক্ষেপ করাকে তার মৌলিক অধিকার মনে করে। অপর প্রতিবেশী দূরত্ব বজায় রাখার মাঝেই কৃতিত্ব অনুভব করে। বেশ কিছু আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ সদস্য। সেগুলোর কোনোটি মৃতপ্রায়। আর কোনোটিতে বাংলাদেশ হয় অতি নীরব-নিষ্ক্রিয়, নয় বাংলাদেশের কথা সেখানে পাত্তা পায় না। এমন অবস্থায় আসিয়ানের সদস্যপদ অর্জন করলে তা থেকে বাংলাদেশ কতটুকু লাভবান হবে, সেটি একটি প্রশ্ন।
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে আসিয়ানের কথায় আসা যাক। কেন আসিয়ানের বিদ্যমান নীতিতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশের আশা করার কোনো কারণ নেই, তা দেখা যাক।
সময়ের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে আসিয়ান কিছু ফোরাম ও চুক্তির জন্ম দিয়েছে। কিছু দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যিক অঞ্চলের চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে সংলাপ করা ইত্যাদি কাজকে আসিয়ানের সাফল্য বলা যায়। কিন্তু আসিয়ানের নামের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কথা থাকলেও সেই অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণহত্যা বন্ধ বা এর বিচারে কোনো ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে আসিয়ান।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে আছে। কিন্তু টাইম বোমা বিস্ফোরণে ক্ষতি যা হওয়ার বাংলাদেশেরই হবে। আর রোহিঙ্গাদের যা ক্ষতি হওয়ার, তা তো হয়েই চলেছে। সুতরাং অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশের তৎপরতা আরও বেগবান হওয়া প্রয়োজন।
আসিয়ানেরই সদস্যরাষ্ট্র মিয়ানমার গণহত্যাকারী হিসেবে সারা পৃথিবীর কাছে নিন্দিত হয়েছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালত পর্যন্ত গেছে। কিন্তু আসিয়ান আনুষ্ঠানিক কয়েকটি বিবৃতি দেওয়া ছাড়া নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল এবং এখনো তা-ই আছে। আসিয়ানের সদস্যরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আসিয়ান হস্তক্ষেপ না করার নীতিই এর বাহ্যিক কারণ। অবশ্য অঘোষিত একটি কারণও আছে, তা হলো—বিনিয়োগ।
Rohingya issue
পশ্চিমা দেশগুলোর মতো আসিয়ান সদস্যদেরও বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে মিয়ানমারে। বিশ্বব্যাংকের ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, আসিয়ান সদস্যদের মধ্যে মিয়ানমারে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ ৩ দশমিক ০৯ বিলিয়ন, কম্বোডিয়ার ৩ দশমিক ৯৬, মালয়েশিয়ার ৭ দশমিক ৯২, ফিলিপাইনের ৮ দশমিক ৮৬, ইন্দোনেশিয়ার ২২ দশমিক ০৯ এবং সিঙ্গাপুরের ১৭৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে তাই তারা মৌখিকভাবে থাকলেও কার্যত বাণিজ্যই তাদের অগ্রাধিকার।
আসিয়ান পাঁচটি পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রতিজ্ঞা করেছিল। সেগুলো হলো—অতি সত্ত্বর মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধ করা, সব অংশীদারের সঙ্গে সংলাপ, বিশেষ দূত নিয়োগ করা, আসিয়ানের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা দেওয়া এবং সব অংশীদারের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিশেষ দূতের মিয়ানমার সফর। কিন্তু নিজ সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এত বেশি মতভিন্নতা সৃষ্টি হয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই বাস্তবায়ন হলো না। না তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দিল, না সামান্য কয়েকজন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ থেকে পুনর্বাসনের জন্য নিতে চাইল।
আসিয়ানের কোনো সদস্যরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত সাহস করে বলেনি যে লাখো মানুষের জীবন রক্ষা, গণহত্যা ও জাতিগত নিধন বন্ধ করার মতো হস্তক্ষেপের জন্য আসিয়ানের নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। কেউ বলেনি যে অপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা আর গণহত্যা বন্ধে সোচ্চার হওয়া এক বিষয় নয়। কোনো সদস্যরাষ্ট্র বলেনি যে নিজের দেশের লোক দেশে ফিরিয়ে না নিলে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দেবে। কোনো সদস্যরাষ্ট্র বলেনি যে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের আসিয়ান সদস্যপদ বাতিল করবে।
Rohingya issue
সব মিলিয়ে এই প্রশ্ন আসতেই পারে, প্রধান উপদেষ্টা ঠিক কোন পরিকল্পনার জায়গা থেকে বাংলাদেশের জন্য আসিয়ানের সদস্যপদ অর্জনের জন্য চেষ্টা করছেন?
২০২৫-এ মালয়েশিয়া আসিয়ানের সভাপতিত্ব গ্রহণ করবে। তখন যদি তারা রোহিঙ্গা বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নেয় এবং সদস্যরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের নীতি বাস্তবতার আলোকে পুনর্নির্ধারণ করে, তবে তা মানবতার পক্ষে এক ঐতিহাসিক অবদান হবে। এতে মালয়েশিয়ারও স্বার্থ আছে। অল্পসংখ্যক হলেও রোহিঙ্গা নিয়ে মালয়েশিয়াও বিপাকে রয়েছে।